বেদুইন জাতি
প্রাক ইসলামিক যুগে অন্যতম জাতিদের মাঝে একটি ছিলো বেদুইন যাদের জীবনযাত্রার মান ছিলো অত্যন্ত আদিম প্রকৃতির। এরা মূলত যাযাবর জাতি।
.
পূর্ব-পুরুষদের রীতিনীতি অনুসরণ করতে তারা এতটাই আগ্রহী ছিলো যে জীবন মানের কোন ধরণের উন্নয়নের কথা ভাবতেই তারা নারাজ।
.
জীবিকা ধারণের ক্ষেত্রে উট,ভেড়া, মেষ ছিলো তাদের অন্যতম গৃহপালিত পশু। কোথাও একটু তৃণভূমির সন্ধান পেলে সেখানেই অবস্থান করতো।
তবে গতানুগিতকভাবে শিকার ও লুটতরাজ ছিলো জীবিকার প্রধান উপায়।
প্রচলিত আছে, বেদুইনদের সাথে অন্য গোত্রের মানুষদের সর্বদা কলহ-বিবাদ লেগেই থাকতো।
তাদের নীতিই ছিলো, "শত্রুকে বা প্রতিবেশীকে আক্রমণ করাই আমাদের কাজ। কাউকে না পাওয়া গেলে আমরা সহোদর ভাইকেই আক্রমণ করি।"
.
তাদের অত্যাচারে অন্য গোষ্ঠীগুলো এতটাই দিশেহারা হয়ে পড়েছিলো যে কোন কোন গোষ্ঠী বেদুইনদের সাথে চুক্তির ভিত্তিতে লুটপাটের ক্ষতি থেকে নিজেদের রক্ষা করে। চুক্তির শর্ত অনুসারে বেদুইনদের হাতে নির্দিষ্ট সময়ে তুলে দেওয়া হতো নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ সম্পদ।
.
তবে বেদুইনদের অতিথিপরায়ণতার কথা প্রাক-ইসলামিক যুগে অনেক কবি লিপিবদ্ধ করে গেছেন।
যত বড় শত্রুই হোক, একবার তাদের বাড়িতে আশ্রয় গ্রহণ করলে অত্যন্ত সমাদরে আপ্যায়ন করা হতো অতিথিদের।
.
বিভিন্ন গোত্রে বিভক্ত বেদুইন সমাজ একে অপরকে রক্ত-সম্পর্কযুক্ত আত্মীয় মনে করতো। তবে স্বজাতির মাঝে হত্যাকাণ্ড হলে প্রতিশোধ গ্রহণে অত্যন্ত নির্মম ছিলো তারা।
.
স্থায়ী ঘরবাড়ি বানানোর চেয়ে তাঁবুতে বসবাস করতো।এক তাঁবুতে থাকতো পরিবারের সকলেই।
কয়েকটি পরিবার মিলে ছিলো একটি গোত্র, আর কয়েকটি গোত্র মিলে হতো একটি "#কৌম" ।
এ গোত্রভিত্তিক সমাজ- ব্যবস্থার ফলে যে #কৌমচেতনা সঞ্চার হতো তা-ই মূলত বিভিন্ন রাজ্যের উত্থান-পতনের মূলে কাজ করতো।
.
"#শায়খ" বলা হতো গোত্রপতিকে। তিনি গোত্রের মধ্যে সাধারণত বয়োজ্যেষ্ঠ এবং জ্ঞান,বুদ্ধি, সাহস, বীরত্বে অন্যদের তুলনায় শ্রেষ্ঠ হয়ে থাকেন।
.
আদিম জনগোষ্ঠীর মতো তারা ছিলো জড় উপাসক। তাদের বিশ্বাস ছিলো, মরুভূমিতে প্রতিকূল স্বভাব-বিশিষ্ট এক ধরণের দেবতা #জিনু বিদ্যমান। চন্দ্র ছিলো তাদের জীবন নিয়ন্ত্রণকারী আর সূর্য ছিলো উর্বরতা ও শস্যাদির দেবতা।