স্টোয়িকবাদ (Stoicism)
প্রাচীনের গ্রীসের চারটি হেলেনিষ্টিক স্কুল বা র মধ্যে স্টোয়িক স্কুল হলাে চতুর্থ ও শেষ স্কুল। এই স্কুল থেকে যে মতবাদ বা দার্শনিক তত্ত্ব প্রচারিত হয় ইতিহাসে তা স্টোয়িক দর্শন বা স্টোয়িকবাদ নামে পরিচিত। এই মতবাদের লালন, পরিবর্ধন, পরিমার্জন সবকিছুই প্রধানত অ-গ্রীসিয় অধিবাসীদের ঘ্বারা সম্পন্ন হয় বলে এবং এর মধ্যে বহু অ-গ্রীসিয় উপাদান বা ভাবধারা প্রাধান্য লাভ করে বলে এটিকে হেলেনিস্টিক (Hellenistic) বলা হয়।
খ্রিস্টপূর্ব ৩০০ অক্দে স্টয়িক মতবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়। সিপ্রিয়ট দার্শনিক যেনাে (৩৪২-২৭o) ছিলেন এই মতবাদের প্রতিষ্ঠাতা। কখনাে এথেন্স নগরীর অভ্যন্তরস্থ একটি বাগান বাড়ীর গাড়ি বাবান্দার নীচে বসে তাঁর শিষ্যদের বক্তৃতা দিতেন এবং বাইরের কোনাে প্রকার এই গাড়িবারান্দাকে গ্রিক ভাষায় স্টোয়া
অনুগামীদের প্রবর্তিত দর্শনকে স্টোয়িকবাদীদের ভাষায় 'Live যাপন করলেই মাত্র শান্তি লাভ করতে পারে। সুখের অক্বেষয়ে সুখ লাভ করা নয়।
বৈরাগ্য অনুসরণ করলেই মানুষ শান্তিতে থাকতে পারে। নিয়তিকে তারা প্রাকৃতিক আইন বা প্রাকৃতিক বিধান হিসেবে উপস্থাপন করেন। তারা মানুষকে স্রষ্টা প্রদত্ত জ্ঞান এবং বিধাতার বিধানের সাথে সামঞ্জস্য বিধানের চেষ্টা করে। সেই সাথে তারা মানুষকে বিশ্বনাগরিকতায়ও উন্দুদ্ধ করতাে। জেনাে এক এবং অভিন্ন পৃথিবীর স্বপ্ন দেখেন যেখানে জাতিগত ভেদাভেদ, রাষ্ট্রীয় দন্দ্, ধনী বা গরীব, দাস বা প্রভূর সংঘাত কলহ থাকবে না। বিশ্বব্যাপী একক রাষ্ট্রকে তারা বিশুদ্ধ রাষ্ট্র বলে অভিহিত করেন। তারা
রাষ্ট্রের আইনকে প্রাকৃতিক আইনের অনুরূপ বলে মত প্রচার করেন। নিয়মনীতি ও রেওয়াজের নামে রাষ্ট্রে আইন প্রণয়ন করা যাবে না। খ্রিস্ট ধর্মের মতাে স্টয়িকরা প্রতিটি মানুষকে আল্লাহর সন্তান মনে করতাে এবং তাদের মধ্যে কোন ভেদাভেদ নেই।
সেটায়িকদের মতে, ব্যক্তি কি মর্যাদার অধিকারী ও কোন বংশােদ্ভূত সেটি বড় কথা নয়। সে কি কি সদগুণাবলীর অধিকারী সেটাই বিবেচ্য। অর্থাৎ ব্যক্তিকে তাঁর গুণ ও লোকাহল তাকে বিব্রত করতে পারত না। বলে। সেই থেকে যে কোনাে এবং তার দর্শন যা স্টোইকবাদ বলে।
0 Comments