বাংলাদেশের বিখ্যাত চিত্রশিল্পী

 

বাংলাদেশের বিখ্যাত চিত্রশিল্পী

 


জয়নুল আবেদীন

জয়নুল আবেদীন বাংলাদেশের প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী। তিনি ‘শিল্পাচার্য’ নামে পরিচিত।

 ম্যাডোনা ৪৩ঃ  তিনি মূলত ১৯৪৩ সালে ম্যাডোনা ৪৩ নামের কালি ও তুলিতে আঁকা চিত্রকর্মে বাংলার ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ (পঞ্চাশের মন্বন্তর) এর ছবি একে আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেন।

সংগ্রামঃ ক্যানভাসে তেলরং। শ্রমজীবী মানুষের জীবনসংগ্রামের চিত্র।

নবান্নঃ ৬০ ফুট দীর্ঘ স্ক্রল।

মনপুরা ৭০ঃ ২০ ফুট দীর্ঘ স্ক্রল। ভোলা জেলার চর মনপুরায় ১৯৭০ সালের প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব প্রত্যক্ষ করার পরে ১৯৭৪ সালে চিত্রকর্মটি অঙ্কন করেন।

মই দেয়াঃ জলরং।

দুই মুখঃ শেষ চিত্র। মৃত্যুর মাত্র কদিন আগে ঢাকার পিজি হসপিটালে শুয়ে চিত্রকর্মটি আকেন।

তার বিখ্যাত চিত্রকর্ম গুলো হল- ‘সংগ্রাম’, ‘মনপুরা-৭০’, ‘ম্যাডোনা-৪৩’ , ‘বিদ্রোহী গরু’, ‘সাঁওতাল রমনী’, ‘গায়ের বধু’, ‘নবান্ন’,  ‘মই দেয়া’, দুই মুখ, গরুর গাড়ি, গুণটানা, বিদ্রোহী গরু, সাঁওতাল রমনী, গায়ের বধূ, দুমকার ছবি, প্রসাধন, পাইন্যার মা  ইত্যাদি। ১৯৭৩ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁকে সম্মানসূচক ডি লিট উপাধি দেওয়া হয়। 

 

তিনি লোক শিল্প জাদুঘর (সোনারগাঁও) এবং ঢাকা আর্ট ইনস্টিটিউড (বর্তমান চারুকলা ইনস্টিটিউড) প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৫ সালে সরকারি উদ্যোগে ময়মনসিংহ শহরে স্থাপিত হয় ‘শিল্পচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা’। ১৯৭৫ সালে তাঁকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। বাংলাদেশের শিল্পীদের মধ্যে তিনি প্রথম জাতীয় অধ্যাপক হওয়ার গৌরব অর্জন করেন

 

কামরুল হাসান

কামরুল হাসান বাংলাদেশের বিখ্যাত চিত্রশিল্পী।তিনি নিজেকে পটুয়া বলতেন। তিনি তরুন বয়সেই ব্রতচারী আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ব্রতচারী আন্দোলনে খাঁটি বাঙ্গালি গড়ে তোলার জন্য ‘মুকুল ফৌজ’ নামে শিশুকিশোর সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। কামরুল হাসান মুজিবনগর সরকারের আর্ট ও ডিজাইন বিভাগের পরিচালক ছিলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময় জেনারেল ইয়াহিয়ার মুখের ছবি দিয়ে আকাঁ পোস্টারটি ‘এই জানোয়ারদের হত্যা করতে হবে’ (Annihilate these Demons)  খুব বিখ্যাত। কামরুল হাসান ১৯৭২ সালে তৎকালীন সরকারের অনুরোধে শিবনারায়ণ দাশ কর্তৃক ডিজাইনকৃত পতাকার বর্তমান রূপ দেন।তিনি ১৯৮৮ সালে স্বৈরাশাসক এরশাদকে ব্যঙ্গ করে ‘দেশ আজ বিশ্ব বেহায়ার খপ্পরে’ পোস্টারটি স্কেচ আঁকেন। তাঁর বিখ্যাত চিত্রকর্ম ‘তিন কন্যা’, ‘রায়বেঁশে নৃত্য’, ‘উঁকি দেয়া’, ‘নবান্ন’, ‘বাংলার রূপ’, ‘জেলে’, ‘প্যাঁচা’, ‘শিয়াল’, ‘বাংলাদেশ’, ‘গণহত্যার আগে ও পরে’ এবং ‘নাইওর’। তিনি বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের মনোগ্রাম অঙ্কন করেন

 

এস.এম সুলতান

শেখ মোহাম্মদ সুলতান বা এস.এম সুলতান বাংলাদেশের একজন বিখ্যাত চিত্রশিল্পী। তাঁর ডাকনাম লাল মিয়া। তিনি ১৯২৩ সালের ১০ আগস্ট নড়াইলের মাছিমদিয়ার এক দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। সুলতান ‘খাকসার আন্দোলন’ নামে একটি সেবামূলক সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন।

 তাঁর বিখ্যাত চিত্রকর্ম ‘প্রথম বৃক্ষরোপণ’, হত্যাযজ্ঞ, জমি কর্ষণ, মাছ কাটা, ধান মাড়াই এবং ‘চরদখল’।শেষ বয়সে নড়াইলের নিজবাড়িতে তিনি শিশুদের জন্য ‘শিশুস্বর্গ’ এবং চারুপীঠ’ নামে দুটি চিত্র অঙ্কন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। নড়াইলের চিত্রা নদীর পাড়ে মাছিমদিয়ায় রয়েছে তার সংগ্রহশালা। শিল্পকলার ক্ষেত্রে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে রেসিডেন্ট আর্টিস্টের সম্মান প্রদান করে।

রনবী

রফিকুন্নবী (উপনাম রনবী)বাংলাদেশের খ্যাতনামা ব্যাঙ্গচিত্র শিল্পী ও কার্টুনিস্ট।‘টোকাই’ নামক চরিত্রটি তাঁর অনবদ্য সৃষ্টি।

 

মুস্তফা মনোয়ার

মুস্তফা মনোয়ারের অমর সৃষ্টি শিক্ষামূলক কাটুন ‘মীনা’। মীনা দক্ষিন এশিয়ার বিভিন্ন ভাষায় নির্মিত একটি জনপ্রিয় টিভি ধারাবাহিক এবং কমিক বই।মীনার জনপ্রিয়তা এবং গ্রহণযোগ্যতার জন্য সার্কের পক্ষ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর ‘মীনা দিবস’ ঘোষনা করা হয়।

১৯৮৫ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাফ গেমস (বর্তমান নাম সাউথ এশিয়ান গেমস)- এর মাসকট ছিল মিশুক। টানা টানা মায়াবী চোখের হরিণ মিশুক- এর স্থপতি মুস্তফা মনোয়ার।

সফিউদ্দিন আহমেদকে বাংলাদেশের আধুনিক ছাপচিত্রের জনক বলা হয়। তাঁর উল্লেখযোগ্য চিত্রকর্ম – জলের নিনাদ ও মেলার পথে। তাঁর রেখাচিত্রের সিরিজের নাম ব্ল্যাক সিরিজ বা কালো চিত্রমালা।

শিশির ভট্টাচার্য দৈনিক ‘প্রথম আলো’ পত্রিকার মূল কার্টুনিস্ট।

Post a Comment

Previous Next

نموذج الاتصال