জি-৭ এর বিউল্ড ব্যাক বেটার ওয়ার্ল্ড (B3W) পরিকল্পনা
জি-৭ নিয়ে চিনের হুমকির পরই পাল্টা মুখ খুলল সাত দেশের এই জোট। চিন বলেছিল এটি একটি চোট জোট যারা নিজেদর স্বার্থ কায়েমের জন্য অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া দেশগুলিকে কোনও গুরুত্ব দিচ্ছে না। ধনী দেশগুলির একটি ছোট জোট গোটা বিশ্বের ভাগ্য নির্ধারণ করতে পারে না। এবার চিনকে মোক্ষম জবাব দিতে মাঠে নামলেন স্বয়ং আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। শনিবার জি-৭ বৈঠকের মধেই চিনকে বিপদে ফেলতে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন জি-৭ নেতারা। এশিয়ার মহাশক্তিধর দেশটির পরিকাঠামো প্রকল্প ‘বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ (বিআরআই-কে) মোকাবেলায় ‘দ্য বিল্ড ব্যাক বেটার ওয়ার্ল্ড’ পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন জি-৭ নেতারা। এটি ‘বিথ্রিডব্লিউ’ নামে পরিচিত হবে । ভবিষ্যতের করোনার মতো অতিমারি মোকাবিলার ক্ষেত্রেও এই প্রকল্প কাজ করবে বলে জানা গিয়েছে।
জি-৭-এর এই পরিকল্পনাটির পিছনে রয়েছে পুরোপুরি আমেরিকনা প্রেসিডেন্টের মস্তিষ্ক। এটি মূলত জো বাইডেনের নিজস্ব পরিকল্পনা। এমনকি এই বিষয়ে যে প্রেস রিলিজ প্রকাশ করা হয়েছে সেটিও হোয়াইট হাউজের ছাপওয়ালা কাগজে লেখা।যদিও চিনি পাল্টা জবাব দিয়েছে, একে বিআরআই-এর সরাসরি প্রতিক্রিয়া বলে। বিআরআই হচ্ছে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর একটি মহাপরিকল্পনা। এর মাধ্যমে দেশগুলোকে ঋণ ও সাহায্য প্রদান করে চিন। এই ঋণ ব্যবহৃত হয় নানা পরিকাঠামো, পরিবহণ, বাণিজ্য ও যোগাযোগ প্রকল্প বাস্তবায়নে। পূর্ব এশিয়া থেকে শুরু করে ইউরোপ পর্যন্ত এই প্রকল্পের অধীনে কাজ চলছে।এদিকে জি-৭-এর বিথ্রিডব্লিউ-এর উদ্দেশ্যও একই। বেসরকারি অর্থায়ন ও বিনিয়োগের ওপর এতে জোর দেওয়া হয়েছে। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের দেশগুলিতে একশ বিলিয়ন পরিকাঠামো তৈরির ক্ষেত্রে বিথ্রিডব্লিউ কাজ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। যা পুরোটাই হবে উচ্চ মানের এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে। এই পরিকল্পনাতেই স্বাক্ষর করেছেন জি-৭ ভুক্ত সকল দেশের নেতারাই।
আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ ও মিডিয়ার মতে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন বুঝতে পারছেন যে, পশ্চিমের দেশগুলি পদক্ষেপ নিতে দেরি করে ফেলেছে। চিনের বিআরআই প্রকল্প চালু হয় ২০১৩ সালে। এতে যুক্ত হয়েছে ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের শতাধিক দেশ। বিআরআই-এর অধীনে রয়েছে ২৬০০ প্রকল্প। যেখানে এর মধ্যেই মোট বিনিয়োগ হয়েছে ৩.৭ ট্রিলিয়ন ডলার। তবে এটি শুধু অর্থ, সাহায্য কিংবা উন্নয়নের প্রশ্ন নয়। এই প্রকল্পের আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক গুরুত্বও অনেক। এই প্রকল্পের ফলে চিন পৃথিবিীর নানা প্রান্তে তাদের আধিপত্য কায়েম করতে সক্ষম হয়েছে।জি-৭ দেরিতে হলেও এখন বুঝতে পারছে যে, এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলো তাদের বিপরীত শক্তির দিকে ভিড়তে শুরু করেছে। যা তাদের কাছে অশনি সঙ্গেত বলেই মনে করছেন জি-৭ নেতৃত্ব।
0 Comments