বাংলাদেশের বৈদেশিক নীতি
আধুনিক বিশ্বে কোন রাষ্ট্রই বিচ্ছিন্ন ভাবে থাকতে পারে না। নিজের স্বার্থ ও অস্তিত্ব রক্ষার জন্য প্রত্যেক রাষ্ট্রকে অন্য রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করে চলতে হয়। প্রতিটি রাষ্ট্র এখন পরষ্পর নির্ভরশীল। প্রতিটি রাষ্ট্র নিজস্ব জাতীয় লক্ষ্য, নীতি ও স্বার্থ বাস্তবায়নে সচেষ্ট থাকে। বৈদেশিক নীতি হল সেই স্বার্থ ও লক্ষ্য বাস্তবায়নের একটি বিশেষ পদ্ধতি মাত্র।
বৈদেশিক নীতি কাকে বলে ?
সাধারণভাবে বৈদেশিক নীতি হল কোন দেশের জাতীয় নীতির সেই অংশ, যা বহির্বিশ্বের সাথে সম্পর্কযুক্ত। রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধন, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, সর্বোপরি বিশ্বে সম্মানজনক অবস্থান সৃষ্টির জন্য বৈদেশিক নীতি রাষ্ট্রীয় নীতির অনিবার্য অংশ।
বাংলাদেশের বৈদেশিক নীতি
‘‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্রুতা নয়’’
সংবিধানের ২৫নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশের বৈদেশিক নীতিসমূহ নিচে উপস্থাপন করা হল
- জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও সমতার প্রতি শ্রদ্ধা, অন্য রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা, আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং আন্তর্জাতিক আইনের ও জাতিসংঘের সনদে বর্ণিত নীতিসমূহের প্রতি শ্রদ্ধা- এই সকল নীতি হবে রাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ভিত্তি।
- রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে শক্তি প্রয়োগ পরিহার এবং সাধারণ ও সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণের জন্য চেষ্টা করবে।
- প্রত্যেক জাতির স্বাধীন অভিপ্রায় অনুযায়ী পথ ও পন্থার মাধ্যমে অবাধে নিজস্ব সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা নির্ধারণ ও গঠনের অধিকার সমর্থন করবে।
- সম্রাজ্যবাদ, ঔপনিবেশিকতাবাদ বা বর্ণ বৈষম্যবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বের সর্বত্র নিপীড়িত জনগণের ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামকে রাষ্ট্র সমর্থন করবে।
পরিশেষে বলা যায়, বৈদেশিক নীতি হল রাষ্ট্রের সে সকল কার্যাবলির বিবরণী, যার মাধ্যমে রাষ্ট্র তার স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে থাকে। অন্যান্য রাষ্ট্রের ন্যায় বাংলাদেশ জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় বদ্ধপরিকর।
0 Comments