পদ্মিনী উপাখ্যান— রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় (১৮৫৮)
গ্রন্থের বিষয়বস্তু : মধুসূদনের পূর্বে একটি প্রথম বাংলা সাহিত্যের আখ্যানধর্মী কাব্য। পদ্মিনীর কাহিনি টডের 'Annals an Antiquities of Rajastahn' কাহিনি অবলম্বনে রচিত। আলাউদ্দিন কর্তৃক চিতোর আক্রমণ সতীত্ব রক্ষার জন্য পদ্মিনীর প্রাণ বিসর্জনের কাহিনি কে ঐতিহাসিক পরিবেশের মধ্যে বর্ণিত হয়েছে পদ্মিনী উপাখ্যানে। এই কাব্যে ক্ষত্রিয়দের প্রতি রাণা ভীমসিংহের উৎসাহ বাণী স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে জাগিয়ে তুলেছিল। কাব্যে মুসলমান শক্তির বিরুদ্ধে হিন্দু রাজপুতদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য হিন্দু জাতীয়তাবাদের সুর ধ্বনিত হয়েছে যা গুপ্ত কবির যুগে সত্যিই অভিনব বিষয় বলা যেতে পারে পদ্মিনী উপন্যাসে বাংলা কাব্যের জগতে নবদিগন্ত সূচনা করেছে।
গ্রন্থের শ্রেষ্ঠত্বের কারণ :
গ্রন্থটি টডের Annals and Antiquites of Rajasthan অবলম্বনে রচিত। তবে এর কাহিনি পুরোপুরি ঐতিহাসিক নয়।
এই গ্রন্থের ঐতিহাসিক পরিবেশ স্বাদেশিকতা, বীর রস ও করুণ রসে রচিত।
পদ্মিনী উপখ্যান রাজস্থানের জনপ্রিয় কাহিনি। তবে এই আখ্যান কাব্যের চরিত্রগুলি ও রচনারীতি উল্লেখ যোগ্য নয়।
কবি রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতাব্দীর ইংরাজি কাব্য ও স্কট, মুর, বায়রন প্রমুখ কবিদের আদর্শে স্বদেশ প্রেম ও ইতিহাসকে অবলম্বন করে গ্রন্থটি রচনা করেন।
গ্রন্থটির দ্বারা মাইকেল মধুসূদন দত্ত অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।
গ্রন্থটির বাণী মূর্তি প্রাণোজ্বল নয় বলে নবযুগের বার্তাবহ হয়ে উঠতে পারেনি, তবে বীর, রৌদ্র ও করুণরসের স্বচ্ছন্দ প্রকাশে তা স্মরণীয় হয়ে আছে।
0 Comments